চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন রুটে চলে বিআরটিসির বাসছবি: সৌরভ দাশ
৬ সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রাম নগরের বিআরটিসি মোড়ের কাউন্টার থেকে সিলেটগামী বাসটি চট্টগ্রাম ছাড়ে মাত্র সাতজন যাত্রী নিয়ে। সিলেট ও কুমিল্লার কাউন্টারে তেমন যাত্রী ছিল না। কাউন্টারে থাকা মামুন নামের একজন বলেন, আগের দিন রাতেও সিলেটগামী বাসে যাত্রী হয় ১৪ জন। এ বাসে আসন ৫৩টি।
পাশের রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি কাউন্টারের চিত্র কিছুটা ভিন্ন। যাত্রী কয়েকজন। অবশ্য প্রতি ট্রিপে এক-তৃতীয়াংশ আসন ফাঁকা। এমন চিত্র প্রায় প্রতিদিনের। চট্টগ্রাম-সুনামগঞ্জের মতো চট্টগ্রাম থেকে আন্তজেলার অন্য যাত্রাপথে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) বাসে যাত্রী হাতে গোনা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পুরোনো বাস, অনুন্নত সেবা, যাত্রীর বাড়াতে উদ্যোগ না থাকা, বাসের শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) কাজ না করা ও ট্রেনের ওপর নির্ভরতার কারণে যাত্রী কম বিআরটিসির বাসে। নির্দিষ্ট সময় গন্তব্যে না পৌঁছানোও একটি কারণ। এ ছাড়া গাড়িগুলোও পুরোনো; পথে বিকল হওয়াসহ নানা ঝামেলা তো আছেই।
চট্টগ্রামের হাটহাজারী রোডের নতুনপাড়া এলাকার বাস ডিপোর ওয়ার্কশপে বাসছবি: সৌরভ দাশ
বিভিন্ন রুটে বিআরটিসির ভাড়া তুলনামূলক কম। এরপরও যাত্রী মেলে না। ঢাকা থেকে সকালে দুটি ও রাতে দুটি বাস চলে। ঢাকায় যেখানে অন্য পরিবহনের এসি বাসের ভাড়া ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, সেখানে বিআরটিসির এসি বাসের ভাড়া মাত্র ৬০০ টাকা। অথচ নন-এসি অন্য পরিবহনগুলো ভাড়া নেয় ৫৮০ টাকা। বিআরটিএর কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া হিসাবে সিলেটে এসির ভাড়া ১ হাজার ৪৭২ টাকা। কিন্তু বিআরটিসি নেয় মাত্র ৭০০ টাকা। তারপরও যাত্রী মেলে না। সিলেটে বাস চলে দিনে তিনটি।
চট্টগ্রাম থেকে সুনামগঞ্জ যাত্রাপথে (রুটে) প্রতিদিন বিআরটিসির তিনটি এসি বাস চলাচল করে—দিনে দুটি ও রাতে একটি। ভাড়া ৭০০ টাকা। অথচ বেসরকারি পরিবহনে সাধারণ (নন-এসি) ভাড়াই ৮০০ টাকা, আর এসি ১ হাজার ২০০ টাকা। এরপরও ৪৫ আসনের বিআরটিসির বাস প্রায় সময় চলাচল করে অর্ধেকের কম যাত্রী নিয়ে। কখনো একজন যাত্রী নিয়েও যাত্রা করে।
অনেক দিন ধরে এ অবস্থা হলেও কেন এমন হচ্ছে, কীভাবে যাত্রী বাড়ানো যায়, ভালো সেবা দিয়ে যাত্রীদের বিআরটিসিমুখী করার কোনো উদ্যোগ নেই সরকারের এ পরিবহন সংস্থার। অফিশিয়ালি দাম না বাড়লেও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে কাউন্টারের লোকজন ২০ থেকে ৫০ টাকা বেশি দাবি করে যাচ্ছেন যাত্রীপ্রতি।
ভাড়া তুলনামূলক কম হলেও যাত্রী বেশি থাকে না। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি ভালো সেবা দেওয়ার। কিন্তু বিভিন্ন রুটে মালিক সমিতির সঙ্গে গাড়ি চালাতে সমস্যা হয়
মো. জুলফিকার আলী, বিআরটিসি বাস ডিপোর ব্যবস্থাপক
চট্টগ্রাম থেকে আন্তজেলায় দিনে বিআরটিসির ২৭টি বাস চলে ৮টি রুটে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-ঢাকায় ছয়টি, চট্টগ্রাম-সিলেট-সুনামগঞ্জে চারটি, চট্টগ্রাম-নোয়াখালীতে একটি, চট্টগ্রাম-চাঁদপুরে একটি, চট্টগ্রাম-কুমিল্লায় তিনটি, চট্টগ্রাম-রাঙামাটিতে ছয়টি ও চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি-তবলছড়ি রুটে পাঁচটি বাস চলে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর জুলাই থেকে চট্টগ্রাম-বরিশাল রুটে একটি করে বাস চলছে। এ ছাড়া শহর এলাকা এবং বিভিন্ন উপজেলায় কিছু বাস চলে।
চট্টগ্রাম-সুনামগঞ্জের মতো চট্টগ্রাম থেকে আন্তজেলার অন্য যাত্রাপথে বিআরটিসির বাসে যাত্রী হাতে গোনা। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পুরোনো বাস, অনুন্নত সেবা, যাত্রীর বাড়াতে উদ্যোগ না থাকা, বাসের এসি কাজ না করা ও ট্রেনের ওপর নির্ভরতার কারণে যাত্রী কম বিআরটিসির বাসে। নির্দিষ্ট সময় গন্তব্যে না পৌঁছানোও একটি কারণ। এ ছাড়া গাড়িগুলোও পুরোনো; পথে বিকল হওয়াসহ নানা ঝামেলা তো আছেই।
চালক, চালকের সহকারী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিআরটিসির বাসগুলো তুলনামূলক পুরোনো। বাসের রক্ষণাবেক্ষণ ও যাত্রীসেবা বেসরকারি পরিবহনের মতো নয়। এ ছাড়া প্রতিটি রুটে বাসের সংখ্যাও কম। এ কারণে সব সময় বাস পাওয়া যায় না বলে যাত্রীরা বেসরকারি পরিবহনমুখী হচ্ছেন।
বিআরটিসি সূত্র জানায়, গত ২৮ জুন চট্টগ্রাম-সুনামগঞ্জ রুটে ৪৫ আসনের একটি বাস ছেড়েছে ১ জন যাত্রী নিয়ে। দিনের অপর দুটি বাসেও যাত্রী ছিল অর্ধেকের কম। একই দিন চট্টগ্রাম থেকে নোয়াখালী যাত্রাপথের ৪৫ আসনের বাসটি ছেড়েছে মাত্র ৭ জন যাত্রী নিয়ে। তবে আটটি রুটের মধ্যে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে তুলনামূলক বেশি যাত্রী পাওয়া যায়। কিন্তু তাও আসনসংখ্যার (বিআরটিসির বাস ৪৫ ও ৫১ আসনের) তুলনায় গড়ে সিকি ভাগ আসন খালি যায়।
বাসে যাত্রী কম কেন—এ প্রশ্নের জবাবে বিআরটিসি বাস ডিপোর ব্যবস্থাপক মো. জুলফিকার আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভাড়া তুলনামূলক কম হলেও যাত্রী বেশি থাকে না। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি ভালো সেবা দেওয়ার। কিন্তু বিভিন্ন রুটে মালিক সমিতির সঙ্গে গাড়ি চালাতে সমস্যা হয়। শ্রমিকদেরও নানা সমস্যা রয়েছে। গাড়িও কম।’
ওয়ার্কশপে বাস মেরামত চলছেছবি: সৌরভ দাশ
ভাড়া কম তবু, কেন যাত্রীর সংকট
জেলার বাসগুলো ছেড়ে যায় নগরের বিআরটিসি মোড় থেকে। এখানে কাউন্টার থেকে বিভিন্ন যাত্রাপথের টিকিট কাটা হয়। ৬ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটগামী বাসটি চট্টগ্রাম ছেড়েছে ৭ জন যাত্রী নিয়ে। ৫১ আসনের বাসের কিলোমিটার হিসাবে সুনামগঞ্জে ১ হাজার ৩০০ টাকা ভাড়া পড়ে।
কিন্তু ৭০০ টাকায়ও যাত্রী পায় না। কাউন্টারে দায়িত্বরত ব্যক্তিরা জানান, নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অনেক কমেও যাত্রী পাওয়া যায় না। যাত্রীর সঙ্গে দরদাম করতে হয়। যাত্রী কম থাকে বলে ৬৫০ টাকায় সিলেট, ৫০০ টাকায় ঢাকায় যাত্রী পেলে নিয়ে নেওয়া হয়। খালি যাওয়ার চেয়ে যা পাওয়া যায়, তাতেই সন্তুষ্টি।
বিআরটিসির স্কুল বাসে যাত্রী দাঁড়ি যাচ্ছেছবি: সৌরভ দাশ
বিআরটিসি মোড়ে পাশের অপর একটি কাউন্টারে দুই পার্বত্য জেলা রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির টিকিট দেওয়া হয়। ওখানে দু-একজন যাত্রীর দেখা মেলে। গত ২৯ জুলাই বিকেল পৌনে পাঁচটার বাসের টিকিট কেটে রাঙামাটি যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন মো. কামাল নামের একজন। তিনি বলেন, ‘শহরের ভেতর থেকে গাড়িগুলো ছাড়ে, এটা একটা সুবিধা। তাই বিআরটিসিতে যাচ্ছি। কিন্তু এদের গাড়ি কম। সব সময় গাড়ি পাওয়া যায় না। এটা বড় সমস্যা। এ ছাড়া সেবাও অতটা ভালো নয়।’
যাত্রী আগে আরও কম হতো। এখন নতুন চেয়ারম্যান যোগ দেওয়ার পর তা বেড়েছে। চালকদের নানা ধরনের প্রশিক্ষণ, পুরোনো গাড়ি মেরামতসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছেন
জেসমিন সুলতানা, বিআরটিসির পরিচালনা পর্ষদের বেসরকারি সদস্য
বিভিন্ন রুটে বিআরটিসি বাসের ভাড়া তুলনামূলক কম। এরপরও যাত্রী মেলে না। ঢাকা থেকে সকালে দুটি ও রাতে দুটি বাস চলে। ঢাকায় যেখানে অন্য পরিবহনের এসি বাসের ভাড়া ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, সেখানে বিআরটিসির এসি বাসের ভাড়া মাত্র ৬০০ টাকা। অথচ নন-এসি অন্য পরিবহনগুলো ভাড়া নেয় ৫৮০ টাকা।
বিআরটিএর প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া হিসাবে সিলেটে এসি বাসের ভাড়া ১ হাজার ৪৭২ টাকা। কিন্তু বিআরটিসি নেয় মাত্র ৭০০ টাকা। তারপরও যাত্রী মেলে না। সিলেটে বাস চলে দিনে তিনটি। এ ছাড়া নোয়াখালীর ভাড়া ৩০০, চাঁদপুরে ৩৫০ ও কুমিল্লায় ৩০০ টাকা নেওয়া হয়। এ ভাড়া অন্যান্য পরিবহনের চেয়ে কম। এসব রুটে বিআরটিসির নন-এসি বাস চলাচল করে। কিন্তু বাসের সংখ্যা অনেক কম।
নোয়াখালীতে দিনে একটি, কুমিল্লায় দুটি ও চাঁদপুরে একটি বাস চলে। চট্টগ্রাম থেকে রাঙামাটি ১৫০ টাকা আর খাগড়াছড়িতে ভাড়া ২২০ টাকা। বেসরকারি পরিবহনেও একই ভাড়া। রাঙামাটিতে পাহাড়িকা ও খাগড়াছড়িতে শান্তি পরিবহন নিয়মিত চলে। আধা ঘণ্টা পরপর ছাড়ায় বেসরকারি পরিবহনের বাসগুলোয় আসন খালি থাকে না।
শহরের ভেতর থেকে গাড়িগুলো ছাড়ে, এটা একটা সুবিধা। তাই বিআরটিসিতে যাচ্ছি।
রাঙামাটি যাওয়া জন্য অপেক্ষায় থাকা মো. কামাল
রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি রুটে ভাড়া কম হলেও বিআরটিসি বাসে যাত্রী কম। কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দুই বাস ছাড়ার মধ্যে সময়ের ব্যবধান বেশি। রাঙামাটিতে দিনে ছয়টি বাস ছাড়ে। ফিরে আসে ছয়টি। খাগড়াছড়িতে চারটি বাস যাওয়া-আসা করে আটবার। প্রতিটি বাস ছাড়ার মধ্যে সময়ের ব্যবধান দেড় থেকে তিন ঘণ্টা। যাত্রী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন, ভাড়া কম হলেও নিয়মিত বাস পাওয়া যায় না।
তাই যাত্রী কম হয়। পর্যাপ্ত বাস থাকলে যাত্রী আরও বাড়ত। সময়ের ব্যবধানের কারণে বাস না পেয়ে অপেক্ষায় না থেকে অন্য পরিবহনে গন্তব্যে ছোটেন যাত্রীরা। এ ছাড়া বিআরটিসির চালক-সহকারীদের বিরুদ্ধে গাড়ির যত্ন না নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
দীর্ঘ দূরত্বের যাত্রাপথের চেয়ে স্বল্প দূরত্বের, বিশেষ করে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি রুটে যাত্রী তুলনামূলক বেশি বিআরটিসির বাসের। এ জন্য স্বল্প দূরত্বের যাত্রাপথ লাভজনকও। এ দুই রুটে যাত্রী গড়ে অন্য রুটের তুলনায় বেশি হয়। তাই লাভজনক।
এ ব্যাপারে বিআরটিসির চালক মো. সাহাবুদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পুরোনো গাড়িগুলোর জন্য মাঝেমধ্যে সমস্যা হয়। রাস্তায় বিকল হয়ে যায়। তখন ঝামেলায় পড়তে হয়।
এদিকে বিআরটিসি চট্টগ্রামে ১০টি স্কুলবাসও চালায়। এ ছাড়া পটিয়া ও আনোয়ারা উপজেলায় বিআরটিসির বাস চলাচল করে। তবে এসব রুটে যাত্রী হয় ভালো। এর কারণ হলো সময়মতো বাসগুলো পাওয়া যায়।
পড়ে আছে ২৬ বাস
বিআরটিসির বাস ডিপোটি চট্টগ্রাম হাটহাজারী রোডের নতুনপাড়া এলাকায়। এখানে বিআরটিসির গাড়িগুলো রাখা হয়। ওখানে ওয়ার্কশপও রয়েছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম ডিপোয় চলাচলযোগ্য বাস রয়েছে ৬৯টি। এর মধ্যে ১৮টি আনা হয় ২০১৮ সালে। অন্যগুলো পুরোনো।
ওয়ার্কশপে বিআরটিসির বাসছবি: সৌরভ দাশ
এর বাইরে ২৬টি বাস বিকল হয়ে পড়ে আছে ডিপোয়। এখানে কয়েক বছর আগে নষ্ট হওয়া গাড়িও রয়েছে। বিকল গাড়ির মধ্যে পাঁচটির মেরামতের কাজ চলছে। প্রতিটি গাড়ি মেরামতে পাঁচ লাখের বেশি টাকা ব্যয় হচ্ছে। ডিপোয় গিয়ে দেখা যায়, বিকল গাড়িগুলোয় ধুলো জমে আছে। কয়েকটি ধরেছে জং। এক পাশে দুটি গাড়ির মেরামতকাজ করছেন মিস্ত্রিরা।
জানতে চাইলে ব্যবস্থাপক মো. জুলফিকার আলী বলেন, গাড়িগুলো মেরামতের জন্য অনেক টাকা দরকার। আস্তে আস্তে মেরামতযোগ্য গাড়িগুলো মেরামত করা হবে।
লাভালাভের কথা
পণ্য পরিবহনে এগিয়ে রয়েছে সংস্থাটি। চট্টগ্রামে বিআরটিসির ২৮০টি ট্রাক চলাচল করছে। ২৫টি ট্রাক বিকল। প্রতি মাসে পণ্য পরিবহন খাতে এক কোটি টাকার রাজস্ব আসে বলে কর্মকর্তারা জানান। বিসিআইসির সার, কর্ণফুলী পেপার মিলের (কেপিএম) কাগজ পরিবহনসহ নানা পণ্য পরিবহন করা হয় চট্টগ্রাম থেকে। ট্রাক ডিপোর ব্যবস্থাপক মো. মফিজ উদ্দিন বলেন, ‘পণ্য পরিবহনে ভালো আয়ের অবস্থায় রয়েছি আমরা। মে মাসে এক কোটি টাকার মতো আয় হয়েছে চট্টগ্রাম থেকে। যে ২৫ গাড়ি বিকল, সেগুলো মেরামতযোগ্য।’
২০২০-২১ অর্থবছরে বিআরটিসি চট্টগ্রাম বাস পরিচালনায় আয় করে ১৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা। আর ব্যয় হয় ১২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। সেই হিসাবে মুনাফা হয়েছে প্রায় পৌনে ৮২ লাখ টাকা। করোনার কারণে এর আগের বছর আয় হয়নি। ২০২১-২২ অর্থবছরের হিসাব এখনো শেষ করতে পারেনি। তবে এবার লোকসানে পড়ার আশঙ্কা আছে।
বাস ডিপো সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর প্রতি মাসে বেতন খাতে গড়ে ৩৪ লাখ টাকা, জ্বালানি তেলে ৯৫ লাখ টাকা এবং টায়ার ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ যায় ১২ লাখ। বর্তমানে পাঁচটি গাড়ির মেরামত চলছে। প্রতিটির জন্য খরচ হবে চার লাখ টাকার মতো। ব্যবস্থাপক জুলফিকার আলী জানান, বেতন ও জ্বালানি খাতে বড় অঙ্কের খরচ হয়ে যাচ্ছে।
টেকসই উন্নয়ন চাইলে সরকারি পরিবহন খাতকে উন্নয়ন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবহনবিশেষজ্ঞ ও স্থপতি সুভাষ বড়ুয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ব্যবস্থাপনার ঘাটতির জন্য সরকারি বাস যাত্রী পায় না।
সেবা নিয়ে ঘাটতি থাকে। সচল করার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছাও জরুরি। অনেকে ইচ্ছা করে বিআরটিসিকে সচল করতে চায় না।
বিআরটিসির পরিচালনা পর্ষদের বেসরকারি সদস্য জেসমিন সুলতানা। তিনি বিআরটিসি চট্টগ্রামের পরিচালনা পর্ষদেরও পরিচালক। জেসমিন সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, যাত্রী আগে আরও কম হতো। এখন নতুন চেয়ারম্যান যোগ দেওয়ার পর তা বেড়েছে। চালকদের নানা ধরনের প্রশিক্ষণ, পুরোনো গাড়ি মেরামতসহ বিভিন্ন উদ্যোগ তিনি নিচ্ছেন।
No comments:
Post a Comment